Thursday, February 18, 2016

নিরাপদ খাদ্য প্রয়োজন সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন

মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ফরমালিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও অপব্যবহার রোধে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৪’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। গত ৩০ জুন মন্ত্রিসভা বৈঠকে এটি অনুমোদন পায়। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে দেয়া মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রস্তাবিত আইনটি কার্যকর হলে কেউ লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উত্পাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার করতে পারবে না। লাইসেন্সপ্রাপ্তদের চাহিবামাত্র কর্তৃপক্ষকে ফরমালিনের হিসাব দেখাতে হবে এবং লাইসেন্সপ্রাপ্তদের ফরমালিনের হিসাব রাখতে হবে। এ আইনের আওতায় যে অপরাধ, তা কগনেজিবল বা আমলযোগ্য হবে। আইনটি অমান্যের জন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মন্ত্রিসভা অনুমোদিত খসড়া আইনটি এখন বিল আকারে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে এবং জাতীয় সংসদে পাস হলে রাষ্ট্রপতির সম্মতিক্রমে এটি আইনে পরিণত হবে।
মানুষের খাদ্যে বিশেষ করে মাছ, ফলমূল, দুধে ব্যাপক আকারে ফরমালিনের ব্যবহার রোধে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নকে যে জনগণ স্বাগত জানাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আইনটি প্রণয়নের সার্থকতা নির্ভর করবে এর সফল বাস্তবায়নের ওপর। রাজধানী ঢাকায় যাতে ফরমালিন মিশ্রিত ফলমূলসহ অন্যান্য খাবার প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য রাজধানীর সব প্রবেশপথে পুলিশ চেকপোস্ট স্থাপন করেছে। এছাড়া খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন পরীক্ষার জন্য রাজধানীর ১৩৬টি বাজারে স্থায়ী বুথ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন, এসব বুথ শিগগির চালু হবে এবং এগুলোয় কাজ করবেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসব ভালো পদক্ষেপ।
তবে যে বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকা ও সভা-সেমিনারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে তা হলো, খাদ্যদূষণ রোধে পুরো দৃষ্টি ফরমালিনের ওপর নিবদ্ধ হলেও অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক ও উপাদান যেমন— কার্বাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক, কীটনাশক, কৃত্রিম রঙ, সিসা ইত্যাদির খাদ্যে ব্যবহার যেন পার পেয়ে না যায়। কারণ এসব রাসায়নিক ও উপাদান মানবদেহের জন্য ফরমালিনের চেয়ে কোনো অংশে কম ক্ষতিকর নয়। বর্তমানে রোজায় রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে ইফতারিসামগ্রীর ব্যবসা ছিল জমজমাট। অভিজাত পাঁচ তারকা হোটেল থেকে শুরু করে প্রতিটি রেস্টুরেন্টের প্রধান ব্যবসা ছিল ইফতারি বিক্রি। বিকাল থেকেই রাজধানীর অলিগলিতে, মোড়ে মোড়ে চেয়ার টেবিল পেতে অস্থায়ী দোকানগুলোয় ইফতারির পসরা সাজানো হতো। এগুলো কি ভেজালমুক্ত? মোটেই নয়। ‘ইফতারির অনিবার্য অনুষঙ্গ পেঁয়াজু-বেগুনি ভাজতে ব্যবহার করা হয়েছে ইঞ্জিনের পোড়া মবিল। জিলাপি ভাজা হয়েছে মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হাইড্রোজ দিয়ে। মুড়িতে ব্যবহার করা হয়েছে ইউরিয়া সার। জুস-শরবতে ব্যবহার করা হয়েছে রাসায়নিক দ্রব্য’ (যুগান্তর, জুলাই ২)। এদিকে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ফলে, বিশেষ করে লিচু ও আমে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। কীটনাশক দেয়া লিচু খেয়ে ২০১২ সালে দিনাজপুরে দুই থেকে ছয় বছর বয়সী ১৪ জন শিশুর মৃত্যুর কথা কি আমরা সহজে ভুলতে পারব? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের একাধিক গবেষণার বরাত দিয়ে প্রথম আলোর ২ জুলাইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কীটনাশক, রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগ আর শিল্পকারখানা থেকে নির্গত হওয়া বিষাক্ত বর্জ্য মাটি ও পানির মাধ্যমে শস্য, ফল ও সবজিতে প্রবেশ করছে, যা খাদ্যের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে মানবদেহে।
এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজধানীর হাজারীবাগ, আদাবর ও শ্যামলীতে গড়ে ওঠা পোলট্রিফিড কারখানাগুলোয় ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে মুরগি ও মাছের খাবার তৈরি হচ্ছে। এসব খাবারে রয়েছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ক্রোমিয়াম, যা মুরগির মাংস, ডিম এবং মাছের মাধ্যমে মানুষের দেহে ঢুকে পড়ছে। এগুলো মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ফিড ব্যবহার করে উত্পাদিত মুরগি, ডিম এবং মাছ খেয়ে মানুষের লিভার ও কিডনির মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাছাড়া ক্যান্সার সৃষ্টি করার মতো উপাদান রয়েছে এতে।
তাই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে প্রয়োজন সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গির। খাদ্যে ভেজাল রোধে বেশ কয়েকটি আইন থাকলেও সর্বশেষ প্রণীত নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ যুগোপযোগী ও যথেষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ আইনে ভেজাল খাদ্যের সংজ্ঞার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। ‘ভেজাল খাদ্য’ অর্থ এমন কোনো খাদ্য বা খাদ্যদ্রব্যের অংশ, (ক) যাকে রঞ্জিত, স্বাদ-গন্ধযুক্ত, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ বা আকর্ষণীয় করতে এরূপ পরিমাণ উপাদান দ্বারা মিশ্রিত করা হয়েছে, যে পরিমাণ উপাদান মিশ্রিত করা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং যা কোনো আইনে নিষিদ্ধ; বা (খ) যাকে রঞ্জিতকরণ, আবরণ প্রদান বা আকার পরিবর্তন করার জন্য এমন কোনো উপাদান মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মিশ্রিত করা হয়েছে, যার ফলে মূল খাদ্যদ্রব্যের ক্ষতিসাধিত হয়েছে এবং যার ফলে এর গুণাগুণ বা পুষ্টিমান হ্রাস পেয়েছে; বা (গ) যার মধ্য থেকে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণপূর্বক অপেক্ষাকৃত স্বল্পমূল্যের ভিন্ন কোনো উপাদান মিশ্রিত করার মাধ্যমে আপাত ওজন বা পরিমাণ বৃদ্ধি বা আকর্ষণীয় করে ক্রেতার আর্থিক বা স্বাস্থ্যগত ক্ষতিসাধন করা হয়।
এ আইনে নিরাপদ খাদ্যব্যবস্থা-সম্পর্কিত বিধি-নিষেধের বিস্তারিত বর্ণনা আছে। এগুলো হলো— এক. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অথবা বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী রাসায়নিক দ্রব্য বা এর উপাদান বা রাসায়নিক (যেমন— ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, সোডিয়াম সাইক্লামেট), কীটনাশক বা বালাইনাশক (যেমন— ডিডিটি, পিসিবি তৈল ইত্যাদি), খাদ্যের রঞ্জক বা সুগন্ধি, আকর্ষণ সৃষ্টি করুক বা না করুক, বা অন্য কোনো বিষাক্ত সংযোজন দ্রব্য বা প্রক্রিয়া সহায়ক কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণে ব্যবহার বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না। দুই. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রবিধান দ্বারা বা আপাতত বলবত্ অন্য কোনো আইনের অধীন নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়তাসম্পন্ন বা বিকিরণযুক্ত পদার্থ অথবা প্রাকৃতিক বা অন্য কোনোভাবে থাকা কোনো সমজাতীয় পদার্থ বা ভারী ধাতু কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণে ব্যবহার বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না। তিন. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো ভেজাল খাদ্য বা খাদ্যোপকরণ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে উত্পাদন অথবা আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয় করতে পারবেন না। চার. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের আহার্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত মান অপেক্ষা নিম্নমানের কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে উত্পাদন অথবা আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয় করতে পারবেন না। পাঁচ. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত পরিমাণ খাদ্য সংযোজন-দ্রব্য বা প্রক্রিয়াকরণ সহায়ক দ্রব্য কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণে ব্যবহার বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না অথবা এরূপে প্রস্তুতকৃত কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণ আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয় করতে পারবেন না। ছয়. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণে কোনো ভেজাল দ্রব্য মিশ্রণ করার উদ্দেশ্যে শিল্পকারখানায় ব্যবহূত তৈল, বর্জ্য বা কোনো ভেজালকারী দ্রব্য তার খাদ্যস্থাপনায় রাখতে বা রাখার অনুমতি প্রদান করতে পারবেন না।
সাত. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণ আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয় করতে পারবেন না। আট. কোনো ব্যক্তি বা তার পক্ষে নিয়োজিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রবিধান দ্বারা বা আপাতত বলবত্ অন্য কোনো আইনের অধীন নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত পরিমাণ কীটনাশক বা বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ পশু বা মত্স্য রোগের ওষুধের অবশিষ্টাংশ, হরমোন, অ্যান্টিবায়োটিক বা বৃদ্ধি প্রবর্ধকের অবশিষ্টাংশ, দ্রাবকের অবশিষ্টাংশ, ওষুধপত্রের সক্রিয় পদার্থ, অণুজীব বা পরজীবী কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণে ব্যবহার বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না বা এরূপ দ্রব্য মিশ্রিত কোনো খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণ মজুদ, বিপণন বা বিক্রয় করতে পারবেন না।
নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করা এবং এ লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এ আইনে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে নীতিমালা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠনের বিধান রয়েছে আইনে।
এ আইনে খাদ্য ব্যবসায়ীদের দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক খাদ্য ব্যবসায়ী এ আইন বা এর অধীন বিধি ও প্রবিধি প্রতিপালন করে তার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসার মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য উত্পাদন, প্রক্রিয়াকরণ, আমদানি, বিতরণ ও বিপণনের নিশ্চয়তা প্রদান করবেন।
খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানোর দায়ে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে। পুনরায় একই অপরাধের দায়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান করা হয়েছে। এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত স্থাপনের বিধান করা হয়েছে। একজন প্রথম শ্রেণীর বিচারিক বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা প্রতিটি বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত গঠন হবে।
নিরাপদ খাদ্য আইন গত বছর অক্টোবরে জাতীয় সংসদে পাস হলেও বিধিমালা প্রণীত না হওয়ায় আইনটি কার্যকর হয়নি। টিআইবিসহ বিভিন্ন সংস্থা আইনটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে দাবি জানিয়েছে। সর্বশেষ দেশের সব নাগরিকের জন্য বিশুদ্ধ খাদ্য নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে লিগাল অ্যাকশন বাংলাদেশের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ ২০ জুলাইয়ের এক আদেশে সরকারকে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ বিধিমালাসহ গেজেট আকারে প্রকাশ করে দুই মাসের মধ্যে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন। আইনটি কার্যকর ও পুরোপুরি প্রয়োগ করা হলে দেশে নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি বহুলাংশে নিশ্চিত হবে।
সবশেষে যা বলা দরকার তা হলো, নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে আইন, বিধি বা প্রবিধান প্রণয়ন ও গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশই যথেষ্ট নয়। এজন্য দরকার এগুলোর সফল বাস্তবায়ন। গত চার দশকে কোনো সরকারই এ কাজ করতে সক্ষম হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর সঙ্গে অনেক রাঘববোয়াল জড়িত, যাদের ক্ষমতার ভিত খুব শক্তিশালী। তাদের রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। এদের অনেকে সময়ে সময়ে ক্ষমতায় আসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ক্ষমতাসীন সরকার আগ্রহী হয় না। তাই নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা তালিকায় বাংলাদেশের দুর্বল অবস্থানে থাকার অন্যতম কারণ হলো নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির অনিশ্চয়তা।
লেখক: মো. আবদুল লতিফ মণ্ডল সাবেক সচিব ও কলাম লেখক

No comments:

Post a Comment